শওকত বিন আশরাফ।।দক্ষণ আফ্রিকা থেকে।।
দক্ষিণ আফ্রিকায় স্মরণকালের ভয়াবহ হামলা এবং লুটপাটের শিকার হয়েছে বাংলাদেশী ব্যবসায়ীরা।গত তিন দিন ধরে চলে আসা হামলা ও লুটপাটের শিকার হয়ে সাতশত বাংলাদেশী দোকান পাট হারিয়েছে।সেই সাথে তিন হাজার বাংলাদেশী নাগরিক দোকান পাট হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে গেছে।
দেশটির ফ্রী স্টেইট প্রদেশের প্রাদেশিক রাজধানী এবং দক্ষিণ আফ্রিকার বিচারিক রাজধানী ব্লুমফন্টেইনে কৃষ্ণাঙ্গ নাগরিকদের হাতে হামলা ও লুটপাটের শিকার এসব বাংলাদেশীরা গত তিনদিন ধরে মানবেতর জীবনযাপন করছে।এর মধ্যে অন্তত দশজন বাংলাদেশী কৃষ্ণাঙ্গদের হামলায় আহত হয়েছেন।ক্ষতিগ্রস্ত এসব বাংলাদেশীরা সহায় সম্বল হারিয়ে আশ্রয় নিয়েছে স্হানীয় পুলিশ স্টেশনে কিংবা কারো বাসা বাড়িতে।এছাড়া ক্ষতিগ্রস্ত এসব বাংলাদেশীদের প্রাথমিকভাবে সহযোগিতা করে যাচ্ছেন স্হানীয় কয়েকজন বাংলাদেশী নাগরিক।
গত সোমবার কৃষ্ণাঙ্গরা মারাগুয়া কমিউনিটি কনসার্নের ব্যনারে বিভিন্ন দাবি দাওয়া নিয়ে আন্দোলন শুরু করলেও মিছিল থেকে বিদেশি নাগরিকদের দোকানে হামলা ও লুটপাটের চেষ্টা চালায়।এসময় দোকানে কর্মরত সিকিউরিটির গুলিতে একজন কৃষ্ণাঙ্গ যুবক নিহত হয়।এই ভাবে ঘটনার সূত্র হলেও গত তিনদিনে কৃষ্ণাঙ্গদের ভয়াল থাবায় বিরানভূমিতে পরিণত হয়েছে বাংলাদেশী অধ্যুষিত ব্লুমফন্টেইনের অধিকাংশ এলাকা।একজন কৃষ্ণাঙ্গ যুবক নিহত হওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে লুটপাটে মাতোয়ারা হয়ে উঠে সূযোগ সন্ধানী কৃষ্ণাঙ্গরা।সোমবার দুপুর থেকে শুরু হওয়া লুটপাটে এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত প্রায় সাতশো বাংলাদেশী নাগরিকদের দোকান ভাঙচুর ও লুটপাট হয়েছে।লুটপাটের শিকার হয়ে নিঃস্ব হয়েছে প্রায় তিন হাজার বাংলাদেশী নাগরিক।এখনো হামলা এবং লুটপাট চলছে।পুলিশের আশংকা,হামলা এবং লুটপাট ছড়িয়ে পড়তে পারে ব্লুমফন্টেইনের আশপাশের ২৫টি লোকেশনে।
বাংলাদেশীর দোকানে কেন এই হামলা তদন্ত করতে গিয়ে ফ্রী স্টেইট প্রদেশের প্রাদেশিক পুলিশের উচ্চ পর্যায়ের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন,লুটপাটের সাথে জড়িত কৃষ্ণাঙ্গদের বিরুদ্ধে পুলিশ কোন প্রতিরোধ মূলক ব্যবস্হা নিচ্ছেনা,কারণ ফ্রী স্টেইট প্রদেশের পুলিশ এখন দুইভাগে বিভক্ত।ঐ পুলিশ কর্মকর্তার ভাষ্য অনুযায়ী দূর্নীতির দায়ে সদ্য অপসারিত ক্ষমতাসীন এএনসির সেক্রেটারি জেনারেল এসি মাকাসুলের অনুসারীরা এই লুটপাট এবং হামলার সাথে জড়িত।সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে এএনসির অপসারিত সেক্রেটারি জেনারেল তার সমর্থকদের উস্কে দিয়েছে।যে কারণে লুটপাট গোটা ব্লুমফন্টেইনে ছড়িয়ে পড়ছে।এইদিকে পুলিশের একটি গ্রুপ এএনসির অপসারিত সেক্রেটারি জেনারেলের অনুসারী হওয়ার কারণে হামলাকারীদের বিরুদ্ধে কোন প্রকার এ্যাকশনে যেতে চাচ্ছেনা।
এএনসির অপসারিত সেক্রেটারি জেনারেলের এলাকায় প্রচুর জনসমর্থন থাকার কারণে প্রাদেশিক সরকারের প্রধান বার বার মিটিংয়ে বসেও হামলা এবং লুটপাট থামানোর জন্য কোন কূলকিনারা করতে পারছেনা।
সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী এখন পর্যন্ত ১০ টি লোকেশনে হামলা এবং লুটপাট করেছে কৃষ্ণাঙ্গরা।পুলিশের ভাষ্য অনুযায়ী সবকটি লোকেশনে সকল বিদেশি নাগরিকদের দোকানে হামলা এবং লুটপাট করবে কৃষ্ণাঙ্গরা।আজ বুধবার একদল কৃষ্ণাঙ্গ মিছিল সহকারে আবার বিদেশীদের দোকানে হামলা করার চেষ্টা করলে পুলিশ তাদের টিয়ার গ্যাস এবং রাবার বুলেট ছুড়ে তাদের ছএভংগ করে দেয়।প্রবাসী বাংলাদেশীরা এখনো হামলা এবং লুটপাটের আশংকা করলেও বাংলাদেশী কমিউনিটির সাধারণ প্রবাসীদের সহযোগিতায় এগিয়ে আসেনি।